06 May 2024, 03:50 pm

চট্রগ্রামের সংবাদগুচ্ছ : কোটি কোটি টাকার আমদানী পণ্যের ১৫ লাইটার জাহাজ খুজে পাচ্ছেনা কাস্টম

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম : বিদেশ থেকে আমদানি করা কোটি কোটি টাকার পণ্যের শুল্ক পরিশোধ না করা ১৫টি লাইটারেজ জাহাজ খুঁজে পাচ্ছেনা চট্টগ্রাম কাস্টম। কাস্টমস জাহাজগুলো খুঁলে গত মঙ্গলবার এসব জাহাজের অবস্থান জানতে চেয়ে কাস্টমসের পক্ষ থেকে লাইটারেজ জাহাজের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিটিসি) নিকট জরুরি পত্র দেওয়া হয়েছে। চিঠির জবাবে ডব্লিউটিসি ওইসব জাহাজের ব্যাপারে কিছু জানে না বলে জানিয়েছে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে সাড়ে আট মিটার ড্রফট ১৯২ ও মিটারের বেশি লম্বা জাহাজ প্রবেশ করতে পারে না। এই ধরনের জাহাজে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টন পণ্য বহন করতে পারে। এর থেকে বেশি ধারণক্ষমতার জাহাজ গুলোকে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করে পণ্য খালাস করতে হয়। আবার কিছু কিছু জাহাজ ড্রাফট কমানোর জন্যও বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাস করে। বহির্নোঙ্গরে বর্তমানে বছরে ৯শর বেশি মাদার ভ্যাসেল হ্যান্ডলিং হয়। এসব জাহাজে অন্তত ৬ কোটি টন পণ্য হ্যান্ডলিং করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে প্রায় দেড় হাজার লাইটারেজ জাহাজ রয়েছে। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ বড় বড় কিছু আমদানিকারকের নিজস্ব লাইটারেজ জাহাজে নিজেদের পণ্য পরিবহন করে। এর বাইরে সাধারণ আমদানিকারকদের আমদানিকৃত কয়েক কোটি টন পণ্য ডব্লিউটিসির নিয়ন্ত্রণাধীন লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। ডব্লিউটিসি প্রতিদিন বার্থিং সভা করে আমদানিকারকদের চাহিদার বিপরীতে লাইটারেজ জাহাজ বরাদ্দ দেয়। বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত স্টিভিডোরিং প্রতিষ্ঠানগুলো বহির্নোঙ্গরে অবস্থানকারী মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য লাইটারেজ জাহাজে দেয়ার আগে শুল্ক পরিশোধসহ কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হয়। শুল্ক পরিশোধ ছাড়া মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য লাইটারেজ জাহাজে নামানোর সুযোগ থাকে না। তবে প্রভাবশালী কিছু আমদানিকারক নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে শুল্ক আইনের ৭৮ ধারায় শুল্ক পরিশোধ না করে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাস করে। এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, কাস্টমসের শুল্ক পরিশোধের পরই কেবল লাইটারেজ জাহাজ থেকে পণ্যগুলো ঘাটে নামানো যাবে। শুল্ক পরিশোধ না করা পর্যন্ত এসব জাহাজ কাস্টমসের নিয়ন্ত্রণে সাগরে অবস্থান করবে। বিভিন্ন সময় শুল্ক আইনের ৭৮ ধারার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এই ধরনের ১৫টি লাইটারেজ জাহাজের খোঁজ পাচ্ছে না। জাহাজগুলোর বিষয়ে জানতে কাস্টমস কর্মকর্তারা গতকাল ডব্লিউটিসিতে চিঠি দিয়েছে।

১৫টি লাইটারেজ জাহাজ হচ্ছে, এমভি ক্রাউন মেরিনার্স-৪, এমভি ক্রাউন মেরিনার্স-৫, এমভি ক্রাউন মেরিনার্স-৬, এমভি ক্রাউন মেরিনার্স-৭, এমভি সাহাবা-১১, এমভি সাহাবা-১২, এমভি সাহাবা-১৩, এমভি সাহাবা-১৪, এমভি সাহাবা-১৫, এমভি সাহাবা-১৬, এমভি প্রিন্সেস মাইসা পারিসা, এমভি লামিসা-১, এমভি মিতিলা সালমান-৯, এমভি নুহুরতরী ও এমভি ইশরাত জাহাজ-২। উপরোক্ত জাহাজগুলোর অবস্থান জানতে চেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার আরজিন খাতুন গত ৩১ অক্টোবর ডব্লিউটিসির নির্বাহী পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন। চিঠির জবাবে ডব্লিউটিসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশীদ খান গতকাল কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, ১৫টি জাহাজের ব্যাপারে কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

ডব্লিউটিসি জানায়, তারা আমদানিকারক প্রতিনিধি, লাইটার জাহাজের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে প্রতিদিন বার্থিং সভার মাধ্যমে লাইটার জাহাজের সব কাগজপত্র আমদানিকৃত পণ্যের ডিউটি, এক্সাইজ ডিউটি, সার্ভিস ট্যাঙ এবং সম্পূরক শুল্কসহ শুল্কায়নের সব ধরনের কাগজপত্র, ভ্যাট ও বন্দরের পাওনা পরিশোধের প্রমাণ দেখার পরই লাইটারেজ জাহাজ বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দ-পরবর্তী লাইটার জাহাজ মাদার ভ্যাসেল থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী পণ্য বোঝাই নিচ্ছে কিনা, যাত্রাপথে কোনো সমস্যা বা কোনো স্থানে অবস্থান করছে কিনা এবং আনলোডিং পয়েন্টে সিরিয়াল মোতাবেক পণ্য খালাস হচ্ছে কিনা এসব বিষয় ডব্লিউটিসি মনিটরিং করে। এছাড়া এই সংস্থা সার্ভেয়ারের মাধ্যমে লাইটার জাহাজে চোরাই পণ্য লোড দেয়া হয়েছে কিনা তা-ও মনিটরিং করে।

চিঠিতে বলা হয়, আমদানিকৃত পণ্য লাইটারেজ জাহাজে বোঝাই থেকে শুরু করে আমদানিকারকের প্রাপ্তি স্বীকার পর্যন্ত সব কার্যক্রমই এই মনিটরিংয়ের আওতায় থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ফ্যাক্টরি মালিক ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ডব্লিউটিসির সিরিয়াল প্রথা হতে জাহাজ বরাদ্দ না নিয়ে নিজেদের মতো করে লাইটার জাহাজ ভাড়ার চুক্তিতে নিয়ে পণ্য খালাস করে নিয়ে যায়। রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যেই এই ধরনের তৎপরতা চলে বলে চিঠিতে বলা হয়। এর ফলে নৌ পরিবহন সেক্টরে বিশৃঙ্খলা ও অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে। সরকারও বিভিন্নভাবে রাজস্ব হারাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার সাথে কিছু শিপিং এজেন্টস এবং স্টিভিডোরিং প্রতিষ্ঠান জড়িত। কাস্টমসের চিঠির জবাবে ডব্লিউটিসি বলেছে, পত্রে উল্লেখিত জাহাজসমূহ দীর্ঘদিন ধরে অত্র সংস্থার সিরিয়ালের বাইরে গিয়ে বিভিন্ন আমদানিকারক ও ফ্যাক্টরির সাথে ভাড়ার চুক্তিতে পণ্য পরিবহন করছে। এসব জাহাজের অবস্থান এবং কার্যক্রম সম্পর্কে ডব্লিউটিসির কাছে কোনো তথ্য নেই।

ডব্লিউটিসির শীর্ষ একজন কর্মকর্তা গতকাল বলেন, প্রচলিত নিয়মের মধ্যে চলাচল করলে জাহাজগুলোর এভাবে লাপাত্তা হওয়ার সুযোগ থাকত না।

 

বাঁশখালীতে আদালতে ভুয়া দলিলে শুনানী, বৃদ্ধের দিনের কারাদন্ড

বশির অলমামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় ভুয়া দলিল নিয়ে মামলার শুনানিতে উপস্থিত হওয়ায় মো. ইদ্রিস (৫৪) নামের এক বৃদ্ধকে কারাদন্ড দিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বুধবার (২ নভেম্বর) সকালে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান এ কারাদন্ড দেন। দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ইদ্রিস বাঁশখালীর বৈলগাঁও ইউনিয়নের আব্দুস সোবহানের ছেলে। মো. ইদ্রিসকে দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় ৭ দিন বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে আরেকটি মিস মামলায় ভুয়া দলিল ব্যবহার করায় বিবাদীর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, ভুয়া দলিল বানিয়ে শুনানিতে উপস্থিত হওয়ায় দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

টিকটকে নারী প্রেমের ঘটনায় বন্ধুর ছুরিকাঘাতে বন্ধু খুন

বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীতে টিকটকে দুই তরুণের সঙ্গে এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্কে ঘিরে দুই তরুণের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আর এ বিরোধকে কেন্দ্র করে নগরের বাকলিয়া থানার ঘাটকূল এলাকায় গত সোমবার ছুরিকাঘাতে রাকিবুল ইসলাম রিকাত খুন হয়েছে। বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান। রিকাত খুনের সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। তারা হলেন- চান্দগাঁও থানার ফুরি দোকান কেন্দ্রীয় মসজিদ সফি হাজির বিল্ডিং ২য় তলার মো. সফির ছেলে মো. গোলাম কাদের প্রকাশ হৃদয় (১৯) ও আনোয়ারা থানার গহিরা নূরনবী চেয়ারম্যানের বাড়ির মো. আবু তাহেরের ছেলে মো. সাকিব (২১)।

ডিসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গ্রেফতার সাকিবের সঙ্গে এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই কিশোরীর সঙ্গে নতুনভাবে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে নিহত রিকাত। প্রেমের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে নানা বিষয়ে স্ট্যাটাস দেয় রিকাত। সেটার সূত্র ধরে গত সোমবার বিকেলে ঘাটকূল এলাকায় রিকাতকে ডেকে নিয়ে যায় হৃদয়। সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রিকাতকে পিঠে ও পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়।

তিনি আরও বলেন, হৃদয়, সাকিব ও রিকাত তিনজনই বন্ধু। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় তারা টিকটক করত। তাদের নির্দিষ্ট পেশা ছিলনা। তারা পরিবারের অবাধ্য সন্তান।  এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, সাকিবের সঙ্গে এক ১৬ বছরের কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই কিশোরের সঙ্গে নতুন করে প্রেমের সম্পর্ক ও ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারে নানা ধরনের এসএমএস কথা হতো রিকাতের। যার কারণে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রিকাতকে ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়। রিকাত খুনের সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার সাকিবের তথ্যের ভিত্তিতে চন্দনাইশ থানা এলাকা থেকে রিকাতকে খুনে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার সাকিবের বিরুদ্ধে চাঁন্দগাও থানায় মাদকের মামলা রয়েছে। রিকাত খুনের ঘটনায় রিকাতের বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

চুক্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে ২১ রাইচ মিলের লাইসেন্স জামানত বাতিল

বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম : গেল বোরো সংগ্রহ কর্মসূচিতে খাদ্য বিভাগের সাথে চাল সরবরাহ চুক্তি না করা এবং চুক্তি করেও চাল সরবরাহ না করায় চট্টগ্রামের  ১৬ টি রাইস মিলের লাইসেন্স বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ। এছাড়া ৫টি চালকলের মালিককে কারণ দর্শানোর পাশাপাশি তাদের অসরবরাহকৃত চালের আনুপাতিক হারে জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গত ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে তাদের লাইসেন্স বাতিল করে আদেশ জারি করে। এর মধ্যে নগরের চান্দগাঁওয়ের ১টি, পাহাড়তলী এলাকার ৫টি, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী ও আনোয়ারার ২টি করে এবং মিরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, লোহাগাড়া ও কর্ণফুলীর ১টি করে রাইস মিল রয়েছে। বাতিল হওয়া রাইস মিলগুলো হলো নগরের চান্দগাঁও এলাকার মো. সাইফুদ্দীনের মালিকানাধীন মেসার্স রহমানিয়া মডার্ন রাইস মিল ও পাহাড়তলীর হাজী আবদুল মালেকের মালিকানাধীন মেসার্স শাহজালাল অটো রাইস মিল, মোজাম্মেল হকের মালিকানাধীন মেসার্স শাহজালাল অটো রাইস মিল ও মেসার্স আল আমিন অটো রাইস মিল, হোসনেয়ারা বেগমের মালিকানাধীন মেসার্স আল মামুন অটো রাইস মিল এবং জাবেদ হোসেনের মালিকানাধীন মেসার্স হাফেজ আহমদ অটো রাইস মিল।

এছাড়া চট্টগ্রামের সাত উপজেলার মধ্যে মিরসরাইয়ের নুরুল আলমের মালিকানাধীন মেসার্স হাজী আলম রাইস মিল, ফটিকছড়ি উপজেলার সোহেল রানার মালিকানাধীন মেসার্স মদিনা মেজর রাইস মিল ও মেসার্স মদিনা অটোমটিক ড্রায়ার রাইস মিল, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার আহমদ সফুর মালিকানাধীন মেসার্স আল মদিনা অটো রাইস মিল, বোয়ালখালী উপজেলার মেহেদি হাসানের মালিকানাধীন মেসার্স দরবার অটো রাইস মিল ও মো. সৈয়দের মেসার্স তৈয়বিয়া অটো রাইস মিল। লোহাগাড়া উপজেলার মমতাজ আহমদের মেসার্স পঠান ভান্ডার অটো রাইস মিল, আনায়ারা উপজেলার জাহেদুল হকের মালিকানাধীন মেসার্স জাহেদ অটো রাইস মিল ও আকতার হোসেনের মেসার্স এন হক অটো রাইস মিল এবং কর্ণফুলী উপজেলার আবু তাহেরের মালিকানাধীন মেসার্স শাহ আমির অটো রাইস মিল। চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল কাদের বলেন, অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ মৌসুমে চুক্তির যোগ্য ছিল কিন্তু চুক্তি করেনি চট্টগ্রামের এমন ১৬ টি রাইসমিলের যথাযথ প্রক্রিয়ায় লাইসেন্স বাতিল এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগে চিঠি পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চুক্তি করেছে কিন্তু কোনো চাল সরবরাহ করেনি এমন একটি মিলের জামানত বাজেয়াপ্তসহ যথাযথ প্রক্রিয়ায় লাইসেন্স বাতিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া চুক্তির পরিমাণের ৮০ শতাংশের কম সরবরাহকারী চারটি রাইসমিলকে বিশেষ বিবেচনায় অসরবরাহ করা চালের অনুপাতিক হারে জামানত বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩১ আগস্ট বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের সময়সীমা শেষ হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সরকারের বোরো সংগ্রহ কর্মসূচিতে সহযোগিতা না করায় চট্টগ্রামে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় প্রভাব পড়েছে। চলতি বছরের বোরো মৌসুমে চট্টগ্রাম থেকে ৮২ হাজার ৫৫৬ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২৭ হাজার ১০২ মেট্রিকটন ধান। চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও রয়েছে বড় ফারাক। ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৪ মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৭১ হাজার ৮১৭ মেট্রিকটন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে ২২ হাজার ৭০৮ মেট্রিকটন আতপ চাল সংগ্রহের বিপরীতে অর্জন হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার ৫৫৭ মেট্রিকটন। লাইসেন্স বাতিলকৃত এসব চালকল মালিকদের সহযোগিতা থাকলে ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতো বলে মনে করছেন খাদ্য বিভাগ।###

 

কর্ণফুলী নদীর অবৈধ বাঁধ স্থাপনা দ্রুত অপসারণের ঘোষনা জেলা প্রশাসন

বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম: কর্ণফুলী নদী রক্ষায় হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২০ সালে পাঁচ দিন অভিযান চালিয়ে তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন। পরে উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রায় দুই হাজারের অধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা থেকে বাদ পড়ে। পরে আবারও দখল হয় কর্ণফুলী নদী। এর পর থেকে কর্ণফুলী নদীর তীর ভরাট করে কেউ তৈরি করেন দোকানপাট, অনেকেই আবার নদী ভরাট করে বাঁধ দিয়ে চালাচ্ছেন ব্যবসায়িক কার্যক্রম।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দখল ও দূষণকৃত নদী হচ্ছে কর্ণফুলী। যে যেভাবে পারে সেভাবে দখল করছে এ নদীকে। সরকারি তালিকাতেই অবৈধ দখলদার আছে দুই হাজারের বেশি। এভাবে দখল হতে চললে কর্ণফুলী নদী বাঁচানো সম্ভব হবে না৷ এ নদী অচিরেই হারিয়ে যাবে।

জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর তীরে উচ্ছেদকৃত জায়গা কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স নতুন করে দখল করছে- এমন অভিযোগ উঠে। পরে বিষয়টি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি সেখানে অভিযান পরিচালনা করে সে জায়গা উদ্ধার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একটি টিম কর্ণফুলী নদীর দখল হওয়া স্থান পরিদর্শন করেন। টানা এক সপ্তাহের অভিযানে দখল হওয়া প্রায় ৮০ ভাগ জায়গা উদ্ধার করে জেলা প্রশাসন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স কর্তৃক নির্মিত বাঁধ সম্পূর্ণ অপসারণ করা হবে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী।

তিনি বলেন, উচ্ছেদকৃত সরকারি জায়গায় কর্ণফুলী শীপ ব্রেকার্স কর্তৃক পুনরায় তৈরিকৃত বাঁধ ও ভরাটকৃত জমি অপসারণের কাজ শুরু হয় ২৮ অক্টোবর থেকে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্ণফুলী শীপ ব্রেকার্স অবৈধ বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যে কাজ শেষের দিকে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কর্ণফুলী নদীতে অবৈধ বাঁধ সম্পূর্ণ রুপে অপসারণ করা সম্ভব হবে।

এদিকে, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর উভয় তীরের ২ হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা, নতুন করে কর্ণফুলী দখল বন্ধ করা এবং সদরঘাট সংস্কারের দাবি জানান চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম, সৃষ্টি, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন এবং ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতি।

 

বোয়ালখালীতে সাপের কামড়ে শিশুর মত্যু

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে সাপের কামড়ে তানজিনা আকতার (১২) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে তানজিনাকে নিজ ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কাটে বলে জানায় পরিবার। তানজিনা উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা ১নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মোহাম্মদ আলীর মেয়ে। সে শাকপুরা এ রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

শাকপুরা ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তানজিনাকে সাপে কাটে। সাপের বিষের কারণে ছটফট করতে থাকলে তাকে ভোরে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বজনরা। তানজিনার বাম হাতের মধ্যমা আঙ্গুলে সাপে কাটার দাগ পাওয়া গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অহিউদ্দিন সুমন বলেন, বুধবার ভোর ৪টার দিকে এক শিশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরিবার বলছে সাপে কেটেছে। যেহেতু মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে তাই অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করা হয়।

 

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2629
  • Total Visits: 701239
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1125

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ ইং
  • ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, বিকাল ৩:৫০

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018